ওসমানীনগরে মাকে গণধর্ষণের স্বাক্ষী না রাখতে ছেলেকেও হত্যা
Published: 2018-04-04 01:44:12

ওসমানীনগরে ক্লু লেস মামলার রহস্য উদঘাটন
নিজস্ব প্রতিবেদক : সিলেটের ওসমানীনগরে মা ছেলেকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে ঘাতকরা। শুধুমাত্র ধর্ষণের উদ্দ্যেশ্যে মা ছেলেকে অপহরণ করে ৪ জনের ঘাতক দল। মাকে ধর্ষণের দৃশ্য দেখে ফেলায় ছেলেকে গলাটিপে হত্যা করে লাশ হাওরে ফেলে যায়। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সিলেটের আমলগ্রহণকারী প্রথম আদালতের বিচারক নজরুল ইসলামের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে ৩ ঘাতক এ কথা স্বীকার করে। ঘাতকরা হলো ওসমানীনগরের পশ্চিম পৈলনপুরের জবেদ আলীর ছেলে জকরুল মিয়া (২২), বদিয়ারচরের মৃত আবদুল মান্নানের ছেলে নজরুল ইসলাম (২৭) ও মৃত আবুল কালামের ছেলে জয়নাল মিয়া (২৯)।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ওসমানীনগর থানার ওসি (তদন্ত) মাঈন উদ্দিন বলেন, গত ১৭ মার্চ রাতে ওসমানীনগর উপজেলার ব্যবসার প্রাণকেন্দ্র গোয়ালাবাজার থেকে ৪ দুর্বৃত্ত হবিগঞ্জের মাধবপুরের মালাকারপাড়ার মৃত অমিত মালাকারের স্ত্রী দীপু মালাকার (৪০) ও তার ছেলে বিকাশ মালাকারকে (৮) অপহরণ করা হয়। পরে অটোরিক্সা দিয়ে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় একারাই হাওড়ে। রাতভর হাওরে দীপু মালাকারকে ধর্ষণ করে, এ সময় ছেলে অমিত মালাকার দেখে ফেললে তাকে গলাটিপে হত্যা করে। ধর্ণণ শেষে দীপু মালাকারকেও হত্যা করে কচুরীপানা দিয়ে চাপা দিয়ে ধর্ষকরা পালিয়ে যায়।
এর কয়েকদিন পর লাশ পচে দুর্গন্ধ ছড়ালে স্থানীয়রা পুলিশকে জানান। পুলিশ অজ্ঞাত লাশ হিসেবে উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে। পরে নিহতদের পরিচয় সনাক্ত হয়। এ ঘটনায় ২৬ মার্চ ওসমানীনগর থানায় মামলা হয়। মামলার তদন্তভার পড়ে ওসি (তদন্ত) মাঈন উদ্দিনের উপর। ক্লুলেস এ মামলার রহস্য উদঘাটনে সোর্স নিয়োগ করেন তিনি। বিশ^স্ত সোর্সের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গত সোমবার রাত ৩টার দিকে ওসমানীনগরের বদিয়ারচর থেকে অপহরণ, ধর্ষণ ও জোড়া খুনে জড়িত ৩ জনকে আটক করে পুলিশ। প্রথমে তারা বিষয়টি অস্বীকার করলেও পুলিশের কৌশলী জিজ্ঞাসাবাদে তারা অপহরণ, ধর্ষণ ও জোড়া খুনে নিজেদের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অভিযুক্তদের নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলে তারা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে ঘটনার বিবরণ দেয়। এ সময় কার কী অবস্থান ছিলো, কিভাবে হত্যাকান্ড সংগঠিত করে তার বর্ণনা দেয়। বিকেলে ঘাতকরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হলে তাদের সন্ধ্যায় আদালতে নিয়ে আসা হয়। আদালতের বিচারক ঘাতকদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন।